অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৭ গোলে হেরে গেলো বাংলাদেশ

দুর্বার অস্ট্রেলিয়া। তার ওপর প্রতিকূল আবহাওয়া। ঠাণ্ডা ও বাতাসও ছিল বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ। এসব মিলে বড় হারের একটা শঙ্কা কাজ করেছিল বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে।

কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা এই প্রতিকূলতার মধ্যেই কিছু অর্জন করে ঘরে ফিরতে চেয়েছিলেন। ম্যাচের আগে শিষ্যদের পরিষ্কার করে বলে দিয়েছিলেন, দৈহিকভাবে এগিয়ে থাকা সকারুজদের বিপক্ষে কী করতে হবে আর কী করতে হবে না।

কিন্তু মাঠে কোনো কিছুই কাজে দেয়নি। মেলবোর্নে প্রথমার্ধে ৪-০ গোলে এগিয়ে থাকা স্বাগতিকরা শেষ পর্যন্ত মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশকে ৭-০ ব্যবধানের বড় হার উপহার দিয়ে।

২০১৫ সালে পার্থে এই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশে হেরেছিল ৫-০ গোলে। ৮ বছর পর এই প্রতিযোগিতায় গোলের বোঝা বাড়লো আরো দুটি। এশিয়ার অন্যতম পরাশক্তি দলের বিপক্ষে ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা দুই থেকে তিন হওয়া ছাড়া আর কোনো অর্জন আছে কিনা সেটা মিলিয়ে দেখারও বিষয়ও আছে।

আগে রক্ষণ সামলাও, তারপর সুযোগ পেলে আক্রমণে যাও-এই মন্ত্র নিয়েই বিশ্বের ২৭ নম্বর দলের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিল ১৮৩ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ। কোনো মন্ত্রে কিছু হয়নি।

বাংলাদেশের রক্ষণকে সারাক্ষণ ব্যতিব্যস্ত রেখে টপাটপ গোল আদায় করে নিয়েছে সর্বশেষ পাঁচটি বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলা অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশ নিজেদের সীমানা ছেড়ে ওপরে ওঠার সুযোগ পায়নি বললেই চলে।

ছিটেফোঁটা সুযোগ যাও এসেছিল অস্ট্রেলিয়ার গোলমুখের দিকে এগিয়ে যাওয়ার, মাঝমাঠ থেকেই তা হয়েছে প্রতিহত। কখনো স্বাগতিক ফুটবলাররা বল কেড়ে নিয়েছেন, কখন বাংলাদেশের ফুটবলাররা ভুল পাসে বল প্রতিপক্ষের পায়ে তুলে দিয়েছেন।

শারীরিক সুবিধা কাজে লাগিয়ে অস্ট্রেলিয়া দুই উইং ব্যবহার করে দুমড়েমুচড়ে দিয়েছে বাংলাদেশের রক্ষণ। বিশ্বনাথ, তারিক, সাদ উদ্দিন আর মুরাদরা বারবার অস্ট্রেলিয়ান ফরোয়ার্ডদের গতির কাছে হার মেনে মাটিতে লুটিয়েছেন।

অসম দুই দলের লড়াইটা যেমন হওয়ার কথা তেমনই হয়েছে। হারটা অনুমিতই ছিল বাংলাদেশের। দেখার ছিল হারের ব্যবধানটা কত হয়। ৮ বছর আগে দুই ম্যাচে বাংলাদেশ গোল হজম করেছিল ৯ টি। এবার এক ম্যাচেই ৭। পরের দেখায় ঘরের মাঠে এই অস্ট্রেলিয়াকে কয় গোলে আটকিয়ে রাখতে পারবে, সেটাই দেখার।

ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা বলেছিলেন, দৈহিকভাবে এগিয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়াকে অহেতুক সেটপিস উপহার দেওয়া যাবে না। সেটা হবে আমাদের জন্য বিপদজনক। এমনকি আজ ম্যাচের আগে সে কথাটা বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলে খেলোয়াড়দের। কিন্তু সেই সেটপিসেই ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে এগিয়ে গিয়েছিল সকারুজরা।

বাঁ দিক দিয়ে বল নিয়ে ঢোকার সময় গুডউইনকে ফাউল করেন মোহাম্মদ রিদয়। রেফারি ফ্রি-কিকের সিদ্ধান্ত দিলে তিনিই কিক নেন। বাংলাদেশের ডিফেন্ডারদের চেয়ে ফিজিক্যালি এগিয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়ান ফরোয়ার্ডরা সুবিধা নেন প্রথম সুযোগেই। হ্যারির নিঁখুত হেড ঠেকানোর কোনো সুযোগই পাননি বাংলাদেশের গোলরক্ষক মিতুল মারমা।

ব্যবধান দ্বিগুণ করতে বেশি সময় নেয়নি স্বাগতিকরা। ডান দিক দিয়ে বল নিয়ে ঢুকে গোলমুখে ক্রস করেন কনোর। ব্রান্ডনের প্লেসিং গোলরক্ষকের হাতের পাশ দিয়ে জড়িয়ে যায় জালে।

শুরুর ঝড়ই আভাস দিয়েছিল বড় ব্যবধানে এগিয়েই বিরতিতে যাবে অস্ট্রেলিয়া। ডিউক হেডে গোল করে ব্যবধান ৩-০ করেন ৩৭ মিনিটে। তিন মিনিট পর ডিউকের আবার গোল। এবার বক্সের মাথা থেকে গড়ানো শটে। ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে বিরতিতে যায় অস্ট্রেলিয়া।

দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর তিন মিনিটের মধ্যেই ব্যবধান ৫-০ করে ফেলে স্বাগতিকরা। জে বসের পাস থেকে গোল করেন ম্যাকলারেন। ৫৯ মিনিটে জামাল ভূঁইয়াকে বসিয়ে রবিউল হাসানকে মাঠে নামান কোচ ক্যাবরেরা।

একচ্ছত্র আধিপত্য নিয়ে খেলে অস্ট্রেলিয়া ষষ্ঠ গোল করে ৭০ মিনিটে। এবারও গোলদাতা ম্যাকলারেন। ৮৪ মিনিটে দলের সপ্তম গোল করে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ম্যাকলারেন।

Rent for add

সর্বশেষ নিউজ

for rent