রাত পোহালেই বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া মুখোমুখি

ম্যাচের আগের মেলবোর্নের শেষ দিনটাও অতিক্রম। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ভালো কিছু অর্জনের স্বপ্ন নিয়ে ঘুমোতে গেছেন ফুটবলাররা। রাত পোহালেই চ্যালেঞ্জের দিন। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় পর্বের প্রথম ম্যাচ। প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩ টা ও স্থানীয় সময় রাত ৮ টায় শুরু হবে দুই অসম দলের লড়াই। এই ম্যাচে বাংলাদেশের লক্ষ্য কী? ঘুরে ফিরে প্রশ্ন একটাই।

ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বুধবার অস্ট্রেলিয়ান কোচ বলেছেন, তার দল বাংলাদেশের বিপক্ষে ভালো ফলাফল করতে যা দরকার তাই করবে। তারা একটা ভালো সূচনা করতে চার ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে।

বিশ্ব ফুটবলের ২৭ নম্বর দলটির লক্ষ্যটা পরিষ্কার। জয় ছাড়া বিকল্প কোনো চিন্তা নেই তাদের। আর ১৮৩ নম্বর দল বাংলাদেশের কী লক্ষ্য টানা ৫ টি বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলা দলটির বিপক্ষে?

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা বলেছেন, ‘আমরা এখানে চার-পাঁচদিন আগে এসেছি। এখানে আমাদের জন্য বড় একটা চ্যালেঞ্জ আবহাওয়া। ম্যাচের রাতে যদি ঠাণ্ডা কম না থাকে, তা আমাদের জন্য অবশ্যই ভালো কিছু হবে না। তারপরও আমরা আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। বাস্তবতা হলো একটি শক্তিশালী দলের বিপক্ষে আমরা খেলতে যাচ্ছি। যারা কেবল এশিয়ারই নয়, বিশ্ব ফুটবলেও অন্যতম সেরা। আমাদের জন্য এমন একটি দলের বিপক্ষে খেলার সুযোগ অবশ্যই ইতিবাচক। আমাদের অভিজ্ঞতা অর্জনের দিকেই নজর দিতে হবে।’

অস্ট্রেলিয়ার কোচ সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তারা বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের সব কিছুই প্রদর্শন করবে। তো বাংলাদেশ কী প্রদর্শন করবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে? এমন এক প্রশ্নের জবাবে ক্যাবরেরা বলেছেন, ‘আমাদেরকে নিজেদের যোগ্যতাটাই প্রমাণ করতে হবে। যদিও সেটা দেখানো চ্যালেঞ্জিং। কারণ, অস্ট্রেলিয়া নিজেদের মাঠে বিশেষ কিছু দেখাতে চাইবে। আমরা গত দুই বছর ধরে অনেক উন্নতি করেছি। সাম্প্রতিক সময় উপমহাদেশের ভালো দলগুলোর বিপক্ষে আমরা আশা জাগানিয়া ফুটবল খেলেছি। আমরা সেই ধারাবাহিকতাই ধরে রাখতে চাইবো। আমরা নিজেদের সেরা খেলাটা দিয়ে এখান থেকে ইতিবাচক কিছু নিয়ে ফিরতে চাই।’

অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে মাঠে আপনার কী কৌশল থাকবে? আপনি কি রক্ষণাত্মক খেলবেন নাকি গোলের চেষ্টা করবেন? হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা বলেন, ‘আমরা অবশ্যই গোলের চেষ্টা করবো। আশা করি, সুযোগও পাবো। আমাদের চেষ্টা থাকবে শক্তি ও সামর্থ্য অনুযায়ী যতটা লড়াই করা যায়। আমরা কেমন দল সেটাই আমাদের মাঠে প্রমাণ করতে চাই।’

অস্ট্রেলিয়ানরা ফিজিক্যালি স্ট্রং। সেটপিসে তারা বিপদজনক। এ বিষয়গুলো নিয়ে কতটা চিন্তিত আপনি? ‘আমি এ বিষয়গুলো নিয়ে অনেক কাজ করেছি। অনেক আলোচনা করেছি। তারা ফিজিক্যালি আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে। শারীরিক সামর্থ্যে অনেক এগিয়ে থাকা একটি দলের বিপক্ষে খেলতে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। অযথা তাদের বেশি সেটপিস উপহার দেওয়া যাবে না। ম্যাচের আগে আবারও আমি এ কথাগুলো স্মরণ করিয়ে দেবো খেলোয়াড়দের’-বলেন বাংলাদেশ কোচ।

অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেছেন, ‘এটা অন্যতম একটি বড় ম্যাচ। অনেক কঠিন ম্যাচ। চার বছর আগে আমরা যে দলগুলোর বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ খেলেছিলাম তার চেয়ে অস্ট্রেলিয়া অনেক ভালো দল। অস্ট্রেলিয়া অন্য লেভেলের দল। আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য ভালো অভিজ্ঞতা অর্জন হবে এ ম্যাচ খেলে। আমাদের কোচ এরই মধ্যে বলেছেন, আমরা আমাদের যোগ্যতা প্রদর্শন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতার চেষ্টা করবো। ম্যাচটা অনেক কঠিন হবে। আমাদেরকে সেরাটা খেলতে হবে আগামীকাল। লড়াইয়ের মানসিকতা নিয়েই আমরা মাঠে নামবো।’

আপনি ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেছেন। ওই অস্ট্রেলিয়া ও এই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কেমন তফাৎ দেখতে পাচ্ছেন? কোন দলকে এগিয়ে রাখবেন? ‘বাস্তব কথা হলো, ২০১৫ সালে আমরা যে দলকে ফেস করেছিলাম সেই দলে টিম কাহিল ও জেরিনাকের মতো বেশ কয়েকজন হাই প্রোফাইল খেলোয়াড় ছিলেন। অনেক খেলোয়াড় ছিলেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের। এখনকার দলের খেলোয়াড়রা টপ টপ ক্লাবে হয়তো খেলে না। তবে স্কটিশ লিগসহ তারা ভালোভালো লিগে খেলেন। যদি এগিয়ে রাখি তাহলে ২০১৫ সালের দলকেই রাখবো’-বলছিলেন জামাল ভূঁইয়া।

দেশের বাইরে ম্যাচ হলেও আপনি অনেক সমর্থন পাবেন। মেলবোর্ন এবং এর আশপাশের শহর থেকে অনেক সাপোর্টার আসবে ম্যাচ দেখতে। কেমন অনুভব করছেন সেটা ভেবে? জামাল বলেন, ‘আমরা দেশের বাইরে যেখানেই ম্যাচ খেলি না কেন বাংলাদেশের দর্শকরা আমাদের অনুপ্রাণিত করে। তারা সমর্থন দিয়ে আমাদের খুশি করে। যা আমাদের আরো মোটিভেশন করে। আমরা চেষ্টা করবো তাদেরও খুশি করতে। এটা বলবো যে, বাংলাদেশ ভালো দল এবং এখানে ভালো খেলোয়াড়ও আছে।’

বাংলাদেশের সমর্থকদের জন্য আপনার কি বার্তা থাকবে? ‘আমাদের দলের জন্য দোয়া করেন, আমার সাথে থাকো। আমি জানি এ ম্যাচ অনেক টাফ হবে। আমরা একটা ভালো রেজাল্ট করতে চাই ইনশাআল্লাহ’-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে জামাল ভূঁইয়া।

আপনি বলছিলেন এই বাংলাদেশ ভিন্ন বাংলাদেশ। অনেক ডেভেলপ করেছে। দলে সাম্প্রতিক সময়ে কী ধরনের ডেভেলপমেন্ট হয়েছে বলে আপনি মনে করেন? জামাল ভূঁইয়ার জবাব, ‘আমাদের আগের চেয়ে বেটার অর্গানাইজেশন। আগের চেয়ে ভালো অবকাঠামো। আগের চেয়ে ভালো সুযোগ-সুবিধা। কোয়ালিটির দিক দিয়েও আমরা এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো। এখন জানি আমরা কি চাই এবং আমাদের কি করতে হবে। আমাদের শক্তি কি এবং দুর্বলতা কোথায় তাও জানি। তাই আমি মনে করে ২০১৫ সালের বাংলাদেশের সঙ্গে এই বাংলাদেশের অনেক পার্থক্য।’

 

Rent for add

সর্বশেষ নিউজ

for rent