স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের জার্সি হস্তান্তর, জানেন না অধিনায়ক, সহ-অধিনায়ক


মহান মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদান রাখা স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের জার্সি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। রোববার দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্মারক চিহ্ন হিসেবে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের হাতে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্য সুভাষ শাহ’র জার্সিটি (১৩ নম্বর) তুলে দেন দলের ম্যানেজার তানজীব মাজহার তান্নাসহ অন্যান্য খেলোয়াড়রা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো.জাহিদ আহসান রাসেল, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: আখতার হোসেন, তথ্য সচিব মোঃ মকবুল হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সচিব খাজা মিয়া, প্রধান তথ্য অফিসার মোঃ শাহেনূর মিয়া, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারা যাকের ও মফিদুল হক, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে শেখ আশরাফ আলী, সুভাষ সাহা, এনায়েতুর রহমান, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠকবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে এই জার্সি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাননি স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু ও সহ-অধিনায়ক প্রতাপ শঙ্কর হাজরা।

মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অবদান অস্বীকার করার নয়। তারাও মুক্তিযোদ্ধা। তাদের নামে গেজেট করা হয়েছে।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক ত্যাগের পরে আজ এই স্বাধীন বাংলাদেশ। সবার অংশগ্রহণর ফলে এটা সম্ভব হয়েছে। আমি স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যদের ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করতে চাই না। তারাও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান।’

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল এমপি বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল অবিচ্ছেদ্য এক অংশ। দেশের ক্রান্তিকালে বল পায়ে স্বাধীনতার পক্ষে জনমত তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ফুটবলাররা। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত অর্জন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যার্থে অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শনী ফুটবল খেলায় অংশ নেয়। পৃথিবীর ইতিহাসে যুদ্ধকালীন প্রথম ফুটবল দল এটি।’

তিনি বলেন, ‘তাদের হাতে হয়তো অস্ত্র ছিল না; কিন্তু মহান মুক্তিযুদ্ধে পায়ের ফুটবলটাই হয়ে উঠেছিল অস্ত্রের মতো ধারালো। তাদের খেলার মধ্যেই মিশে ছিল প্রতিবাদের ভাষা। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের পতাকাতলে এই ফুটবলাররা পশ্চিম বাংলা, বিহার, বেনারস, মুম্বাইসহ ভারতের বিভিন্ন শহরে ১৬টি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলেন। ম্যাচগুলো থেকে প্রাপ্ত কয়েক লাখ ভারতীয় রুপি জমা পড়ে মুক্তিযুদ্ধের তহবিলে। দেশের স্বাধীনতার জন্য ভিনদেশে প্রীতি ম্যাচ খেলে অর্থ সংগ্রহ বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনেই বিরল।’

স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর ফুটবলারদের এই অবদানের কথা বাঙালি জাতির ইতিহাসে চিরদিন অম্লান হয়ে থাকবে। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি জাতি শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করবে ফুটবল মুক্তিযোদ্ধাদের।’

উল্লেখ্য, ক্রীড়া সমিতি থেকে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল ভারতের বিভিন্ন স্থানে ১৬টি প্রদর্শনী ম্যাচে অংশগ্রহণ করে। এই ১৬টি ম্যাচের মধ্যে ১২টি জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ার পাশাপাশি তিনটি খেলার পরাজিত ও একটিতে ড্র করেছিল ইস্পাত কঠিন এ দলটি।

Rent for add

সর্বশেষ নিউজ

for rent