সেনেগালের কাছে ৪ গোল হজম করলো ব্রাজিল

বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রাজিল ফুটবল দলকে বিদায় বলে দিয়েছিলেন কোচ তিতে। এরপর এখনও পর্যন্ত কোনো কোচ নিয়োগ দেয়নি ৫ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। এর ফলও তারা হাতেনাতে ভোগ করছে। বিশ্বকাপের পর তিন ম্যাচের মধ্যে এ নিয়ে দুই ম্যাচ হারলো তারা। সব মিলিয়ে শেষ ৫ ম্যাচের মধ্যে দুটি জয়, তিনটিতে হেরেছে ব্রাজিল।

মঙ্গলবার রাতে পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে বর্ণবাদ বিরোধী ম্যাচে ব্রাজিল মুখোমুখি হয়েছিলো আফ্রিকান সিংহ সেনেগালের। সাদিও মানের দলের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি ভিনিসিয়ুস জুনিয়ররা। একহালি গোল হজম করে সেলেসাওরা হারলো ৪-২ গোলের ব্যবধানে। দুই দলের দ্বিতীয়বারের দেখায় প্রথম জয় পেল আফ্রিকার দেশটি। ২০১৯ সালে সিঙ্গাপুরে প্রথম ম্যাচটি ১-১ ড্র হয়েছিল।

বর্ণবাদ বিরোধী লড়াইয়ের অংশ হিসেবে দুটি আফ্রিকান দেশের সঙ্গে ইউরোপের মাটিতে ম্যাচ খেলার সিদ্ধান্ত নেয় ব্রাজিল। এর প্রথমটি তারা দু’দিন আগে খেলেছিলো বার্সেলোনায় গিনির বিপক্ষে। ওই ম্যাচে ৪-১ গোলে জিতেছিলো সেলেসাওরা। দ্বিতীয় ম্যাচটি খেললো সেনেগালের বিপক্ষে। এ ম্যাচে বরণ করলো পরাজয়।

লিসবনের এস্টাডিও হোসে আলভালেজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটির শুরুতেই লিড নিয়েছিলো ব্রাজিল। কিন্তু এরপরই ছন্দ হারায় তারা। উজ্জীবিত ফুটবল খেলে দুই গোলে এগিয়ে যায় সেনেগাল। পরে ব্যবধান কমালেও শেষ রক্ষা হলো না পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।

সেনেগালের হয়ে জোড়া গোল করেন দলটির তারকা ফরোয়ার্ড, ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপ খেলতে না পারা সাদিও মানে। বায়ার্ন মিউনিখের এই স্ট্রাইকার বুঝিয়ে দিলেন, বিশ্বকাপে তিনি যদি খেলতে পারতেন, তাহলে সেনেগালের অনেকদূর যাওয়ার সম্ভাবনা ছিলো।

ম্যাচের সপ্তম মিনিটেই প্রতিপক্ষের ভুলে বক্সে আলগা বল পেয়ে যান ব্রাজিলের ব্রুনো গিমারেস। তবে পোস্টের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মেরে সমর্থকদের হতাশ করেন এ মিডফিল্ডার।

তবে গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষায় করতে হয়নি। ১১তম মিনিটে বাঁম পাশ থেকে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের ক্রসে ছয় গজ বক্সের মুখে লাফিয়ে উঠে দুর্দান্ত হেড করে দলকে এগিয়ে নেন লুকাস পাকুয়েতা।

১৫তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়ে বল বাইরে মেরে দেন রিচার্লিসন। দুই মিনিট পর ভিনিসিয়ুস প্রতিপক্ষের বক্সে পড়ে গেলে প্রথমে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি, তবে ভিএআরের সাহায্যে সিদ্ধান্ত বদলান তিনি।

২২তম মিনিটে সমতা ফেরায় সেনেগাল। তবে সেটা ছিল পুরোপুরি ব্রাজিলের রক্ষণের ভুলে। বক্সে প্রতিপক্ষের ক্রস ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেনি তারা। পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে বাঁ পায়ের জোরাল ভলিতে গোলটি করেন হাবিব দিয়ালো।

দ্বিতীয়ার্ধের সপ্তম মিনিটে আবারও নিজেদের ভুলে পিছিয়ে পড়ে ব্রাজিল। সাদিও মানের ক্রসে দিয়ালোর হেড ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালেই বল পাঠিয়ে দেন মার্কুইনহোস। অর্থ্যাৎ, আত্মঘাতি গোল। ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে ব্রাজিল।

এর তিন মিনিট পর সাদিও মানের অসাধারণ এক গোলে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় সেনেগাল। শুরুতে পেপ গেয়ের শট ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক এডারসন। ফিরতি বল দিয়ালো পেয়ে পাস দেন মানেকে। বাঁকানো শটে দূরের পোস্টের ওপরের কোণা দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন বায়ার্ন মিউনিখ তারকা।

এর তিনি মিনিট পর আবারও গোল। এবার আত্মঘাতি গোল করা মার্কুইনহোস যেন প্রায়শ্চিত্য করলেন। তার গোলে ব্যবধান কমায় ব্রাজিল। কর্নারের পর পিএসজির এই ডিফেন্ডার বল বুক দিয়ে নামিয়ে লব শটে ক্রসবার ঘেঁষে সেনেগালের জালে পাঠান।

বাকি সময়ে ম্যাচে ফিরতে মরিয়া চেষ্টা চালায় ব্রাজিল, কিন্তু গোলের দেখা আর পায়নি তারা। বরং ইনজুরি সময়ে স্পট কিকে সেনেগালের চার নম্বর গোলটি করেন সাদিও মানে। নিকোলাস জ্যাকসনকে গোলরক্ষক এডারসন ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।

Rent for add

সর্বশেষ নিউজ

for rent