আবাহনীর বিপক্ষে সাইফের দুর্দান্ত জয়

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ১৮তম রাউন্ডের ম্যাচে দুর্দান্ত এক জয় পেয়েছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। আবাহনী লিমিটেডকে ৪-২ গোলে উড়িয়ে দারুণ জয়ে মাঠে ছাড়েন আন্দ্রেস ক্রুসিয়ানীর দল। এ জয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বর আসনটি ধরে রাখল সাইফ এসসি। হেরে লিগ শিরোপা রেস থেকে অনেকটাই ছিটকে গেল আবাহনী। ১৮ ম্যাচ শেষে ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিন নম্বরে অবস্থান সাইফের। সমান ম্যাচে আবাহনীর সংগ্রহ ৩৮ পয়েন্ট।

মুন্সিগঞ্জ শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই আবাহনীকে চেপে ধরে সাইফের ফুটবলাররা। রক্ষণভাগ ঠিক রেখে মুহর্মূহ আক্রমণ চালাতে থাকেন আসরর গফুরভ, এমেকা, এমফন উদোহরা। ম্যাচ শুরুর প্রথম ১০ মিনিটই কেবল আবাহনীর বলতে হবে। ম্যাচে বাকিটা সময় মাঠে রাজত্ব করেছে সাইফ। আবাহনীর কলিন্দ্রেস, ডরিয়েল্টন, রাকিব কিংবা রয়েল, জীবনরা গোলের জন্য চেষ্টার কোনো কমতি রাখেননি। কিন্তু সাইফের রক্ষণ দুর্গ আর গোলরক্ষক মিতুল হাসানের দৃঢ়তার সামনে তাদের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবুসিত হয়েছে।

প্রিমিয়ার লিগের প্রথম লেগে আবাহনীর কাছে ২-১ গোলের ব্যবধানে হেরেছিল সাইফ এসসি। দ্বিতীয় লেগে আবাহনীর জালে এক হালি গোল দিয়ে সেই হারেরই যেন বদলা নিল দলটি। মুন্সিগঞ্জ স্টেডিয়ামে আজ ম্যাচের ১৪ মিনিটেই এগিয়ে যায় সাইফ। আসরর গফুরভের বক্সে ফেলা ক্রস থেকে এমেকার ছোট্ট পাসে বল পেয়েই সেটা আবাহনীর জালে পুরতে সময় নেননি এমফন উদোহ (১-০)।

ম্যাচে এগিয়ে গিয়ে আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেন সাইফের ফুটবলাররা। প্রতিপক্ষের দুর্গে একের পর এক আক্রমণ চলতে থাকে। ম্যাচের ২০ মিনিটে গোলের সুযোগও তৈরি করে সাইফ। কিন্তু এমেকা, রহিমরা গোল মিসের মহড়া দিলে এ যাত্রায় এগিয়ে যাওয়া হয়নি। পিছিয়ে পড়ে আবাহনীও পাল্টা আক্রমণ শানাতে থাকে। ৩৫ মিনিটে ডরিয়েল্টনের চোখ ধাঁধানো গোলে সমতায় ফেরে আকাশী-নীল শিবির। কলিন্দ্রেসের কর্নার থেকে উড়ে আসা বল দারুণ শটে সাইফের জালে জড়িয়ে সতীর্থদের গোলের আনন্দে ভাসান ডরিয়েল্টন (১-১)। তবে সেই আনন্দ ফিকে হতে সময় লাগেনি। মিনিট পাঁচেক পরই সবুজের গোলে এগিয়ে যায় সাইফ (২-১)। লিড ধরে রেখে বিরতিতে যায় দলটি।

প্রথমার্ধে সাইফের আক্রমণের জবাব পাল্টা আক্রমণে দেয়া আবাহনীকে দ্বিতীয়ার্ধে আর খুঁজেই পাওয়া যায়নি। এই অর্ধে গোল করার চেয়ে গোল ঠেকাতেই ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে আবাহনীর খেলোয়াড়দের। ম্যাচের ৬৫ মিনিটে রহিম উদ্দিন গোল করলে জয়ের পথ সুসংহত হয় সাইফের। দারুণ এক হেডে আবাহনীর গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে বল জালে জড়ান সাইফের চৌকষ খেলোয়াড় রহিম (৩-১)।

পিছিয়ে পড়া আবাহনী এরপর গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে উঠে। মেজাজ হারিয়ে করে বসে ভুল। ম্যাচের ৭০ মিনিটে আবাহনীর বদলি খেলোয়াড় ডিফেন্ডার মামুন মিয়া সাইফের বিদেশী রিক্রুট এমফনকে বক্সের ভেতর ফেলে দেন। সঙ্গে সঙ্গে বাঁশি বাজিয়ে পেনাল্টির নির্দেশ রেফারির। এরপর পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে ৪-১ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে দেন সাইফের আরেক বিদেশী খেলোয়াড় এমেরি বাইসেঙ্গে (৪-১)।

এরপর আবাহনী শুধু লড়াই-ই চালিয়ে গেছে। কিন্তু নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোলের সুযোগ সেভাবে আর তৈরি করতে পারেনি। উল্টো সাইফের খেলোয়াড়রা বেশ কিছু গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেছে। যদিও ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে পেনাল্টি পেয়েছে আবাহনী। তবে পেনাল্টি থেকে গোল করে কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছেন কলিন্দ্রেস (৪-২)। দলকে পূর্ণ ৩ পয়েন্ট এনে দিতে পারেননি। ম্যাচের অন্তিম মিনিটে আবাহনীর ফরোয়ার্ড নাবিব নেওয়াজ জীবনকে বক্সে দিলে পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি।

Rent for add

সর্বশেষ নিউজ

for rent