ভিয়ারিয়ালকে হারিয়ে রিয়ালকে ছুঁয়ে ফেলল বার্সা


এল ক্লাসিকোতে হেরে লিগ শিরোপা দৌড় থেকে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছিল বার্সেলোনা। তবে টানা দুই ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদ হোঁচট খাওয়ায় খাওয়ায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের ছুঁয়ে ফেলার দারুণ সুযোগ এসেছিল তাদের সামনে। ভিয়ারিয়ালকে হারিয়ে সে সুযোগটা ভালোভাবেই কাজে লাগালো কাতালানরা।

রোববার ভিয়ারিয়ালের মাঠে স্বাগতিকদের ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে বার্সেলোনা। কাতালানদের হয়ে দুটি গোলই করেছেন আতোঁয়ান গ্রিজমান। ভিয়ারিয়ালের হয়ে একমাত্র গোলটি আসে স্যামুয়েল চুক্কুয়েজের কাছ থেকে।

৩২ ম্যাচ শেষে ৭১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে বার্সেলোনা। এক ম্যাচ বেশি খেলা রিয়ালের পয়েন্টও ৭১। তবে হেড টু হেডে এগিয়ে আছে দলটি। ৩২ ম্যাচে ৭৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ।

ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে এ জয়ে ভালোভাবেই লিগে টিকে রইল বার্সেলোনা। অ্যাতলেতিকোর বিপক্ষে বার্সেলোনার ম্যাচের গুরুত্বও বাড়ল। সেই ম্যাচের ফলাফলের উপর অনেকটাই নির্ভর করবে এবারের আসরে শিরোপা উঠবে কার ঘরে।

এদিন অবশ্য প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেনি বার্সা। বেশ কিছু সহজ সুযোগ পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি দুর্বল ফিনিশিংয়ের কারণে। যে দুটি গোল করেছে তারা, তার একটি হাফ চান্স কাজে লাগিয়েছেন গ্রিজমান। অপরটি প্রতিপক্ষের দেওয়া উপহার। তার উপর প্রায় অর্ধেক সময় স্বাগতিকরা খেলেছে ১০ জন নিয়ে।

ম্যাচের সপ্তম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো বার্সা। গোলরক্ষক সের্জিও আসেনিওর অসাধারণ সেভে সে যাত্রা বেঁচে যায় ভিয়ারিয়াল। ডি-বক্সের মধ্যে দারুণ এক ভলিতে গ্রিজমানকে পাস দেন ফ্র্যাঙ্কি ডি ইয়ং। এ ফরাসি তারকা শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন ভিয়ারিয়াল গোলরক্ষক। পাল্টা আক্রমণ থেকে সুযোগ ছিল স্বাগতিকদেরও। কিন্তু উড়িয়ে মেরে সে সুযোগ নষ্ট করেন জেরার্দ মোরেনো।

১৬তম মিনিটে দিনের সেরা সুযোগটি নষ্ট করেন ডি ইয়ং। জর্দি আলবার ক্রস থেকে একেবারে ফাঁকায় পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি এ ডাচ মিডফিল্ডার। একেবার গোললাইন থেকে ঠেকান গোলরক্ষক আসেনিও। ফিরতি বলেও সুযোগ ছিল। কিন্তু কিছুটা এগিয়ে যায় বল নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি ডি ইয়ং। দুই মিনিট পর আলবার বাড়ানো বল থেকে মেসির নেওয়া জোরালো শট ঠেকিয়ে দেন ভিয়ারিয়াল গোলরক্ষক।

২৬তম মিনিটে চুক্কুয়েজের গোলে এগিয়ে যায় ভিয়ারিয়াল। পাউ তোরেসের বাড়ানো বল দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনকে কাটিয়ে কোণাকোণি শটে লক্ষ্যভেদ করেন এ নাইজেরিয়ান।

সমতায় ফিরতে অবশ্য খুব বেশি সময় নেয়নি বার্সা। পরের মিনিটেই গ্রিজমানের বুদ্ধিদীপ্ত ফিনিশিংয়ে ম্যাচে ফেরে দলটি। অস্কার মিঙ্গুয়েজার থ্রু পাসে বল ধরে ডান প্রান্ত থেকে আলতো টোকায় বল জালে পাঠান এ ফরাসি তারকা।

৩৫তম মিনিটে গোল উপহার পায় বার্সা। গোলরক্ষককে ব্যাক পাস দিয়ে চেয়েছিলেন হুয়ান ফয়েথ। কিন্তু জোর না থাকায় আগেই ধরে ফেলেন গ্রিজমান। জোরালো শটে বল জালে পাঠাতে কোনো ভুল করেননি এ মিডফিল্ডার।

৪৪তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পেতে পারতেন গ্রিজমান। ডি ইয়ংয়ের ব্যাকহিল থেকে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন। কোণাকোণি শটও নিয়েছিলেন। বাঁধা হয়ে দাঁড়ান গোলরক্ষক আসেনিও।

যোগ করা সময়ে ব্যবধান বাড়ানোর ভালো সুযোগ হারায় বার্সা। জটলা থেকে লক্ষ্যে ভালো শট নিয়েছিলেন সের্জিও ডেস্ট। তবে গোললাইন থেকে তার শট ঠেকান গোলরক্ষক।

বিরতির পরপরই সমতায় ফেরার ভালো সুযোগ ছিল ভিয়ারিয়ালের। একেবারে ফাঁকায় থেকে হেড দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন মোরেনো। কিন্তু হেডে জোর না থাকায় তা লুফে নিতে বেগ পেতে হয়নি টের স্টেগেনকে। ৫৬তম মিনিটে সের্জি রোবার্তোর ক্রস থেকে ঠিকভাবে পা ছোঁয়াতে পারলে হ্যাটট্রিক পেতে পারতেন গ্রিজমান। পরের মিনিটে তিন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে শট নিয়েছিলেন মেসি। তবে লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।

৬৩তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়ে গিয়েছিল স্বাগতিকরা। চিক্কুয়েজের কাটব্যাক থেকে জোরালো শট নিয়েছিলেন এতিনি কাপুয়ে। কোনো মতে পা দিয়ে সে শট ঠেকান বার্সা গোলরক্ষক। দুই মিনিট পর বড় ধাক্কা খায় ভিয়ারিয়াল। মেসিকে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ম্যানুয়েল ত্রেগুয়েরোস।

৬৭তম মিনিটে রোবার্তোর কাটব্যাক থেকে ইলাইশের নেওয়া শট লক্ষ্যে থাকলে ব্যবধান বাড়তে পারতো। পাঁচ মিনিট পর ফের সুযোগ পেয়েছিলেন ইলাইশ। কিন্তু বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। ৭৮তম মিনিটে সমতায় ফেরার দারুণ সুযোগ নষ্ট করেন মোরেনো। অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় তার শট।

৮৪তম মিনিটে অবিশ্বাস্য এক মিস করেন ডি ইয়ং। উসমান দেম্বেলের পাস থেকে ফাঁকায় গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান তিনি। কিন্তু লক্ষ্যেই শট নিতে পারেননি এ ডাচ তারকা। এরপরও দুই দল বেশ কিছু আক্রমণের চেষ্টা করে। তবে জালে দেখা পায়নি কেউই। ফলে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বার্সা।

Rent for add

সর্বশেষ নিউজ

for rent