বিশ্বকাপ বাছাই

রাতে ফিলিস্তিনের মুখোমুখি বাংলাদেশ

প্রস্তুতি আর অপেক্ষার পালা শেষ। আজ (বৃহস্পতিবার) রাত সাড়ে ১২ টায় কুয়েতে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে ফিলিস্তিন ও বাংলাদেশ। এটি দুই দলেরই বাছাই পর্বের তৃতীয় ম্যাচ।

বাংলাদেশ আগের দুই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৭-০ গোলে হেরেছে, ১-১ গোলে ড্র করেছেন লেবাননের বিপক্ষে। অন্যদিকে ফিলিস্তিন প্রথম ম্যাচে লেবাননের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করে দ্বিতীয় ম্যাচে ১-০ গোলে হেরেছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।

শক্তি সামর্থ্যে দুই দলের পার্থক্য অনেক। ফিফা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ ১৮৩, ফিলিস্তিন ৯৭তম অবস্থানে আছে। দুই দলের সাম্প্রতিক ম্যাচগুলোয় ফিলিস্তিনের পারফরম্যান্সও অনেক ভালো।

সবকিছু মিলিয়ে ফেবারিট হিসেবেই আজ হোম ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে নামবে ফিলিস্তিন। নিজেদের দেশে যুদ্ধ চলায় তারা কুয়েতকে বেছে নিয়েছে হোমভেন্যু হিসেবে। পরের ম্যাচটি তারা খেলবে বাংলাদেশের বিপক্ষে ঢাকায় ২৬ মার্চ।

ফিলিস্তিনের বিপক্ষে এই দুই ম্যাচের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল দুই সপ্তাহ অনুশীলন করেছে সৌদি আরবে। সেখান থেকে কুয়েতে পৌঁছেছে ১৭ মার্চ। শক্তিশালী দলকে মোকাবিলার জন্য যেভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার প্রয়োজন ছিল বাফুফে সেভাবেই দলকে প্রস্তুতির ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এখন ফুটবলারদের মাঠে নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণের পালা।

প্রতিপক্ষ ফিলিস্তিন কেমন দল? এশিয়ার ফুটবলে দলটি আস্তে আস্তে নিজেদের নতুন উচ্চতায় তুলছে। সর্বশেষ এশিয়ান কাপেই তার ছাপ রেখেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।

ফিফা র্যাংকিংয়ে ৯৭ নম্বরে থাকা ফিলিস্তিনের বিপক্ষে বাংলাদেশের অতীত রেকর্ডও সুখকর নয়। এ পর্যন্ত ৬ বারের মুখোমুখিতে বাংলাদেশ একটি ম্যাচ ড্র করতে পেরেছে। হেরেছে বাকি ৫ ম্যাচ।

২০০৬ সালে ঢাকায় হওয়া এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে প্রথম দেখা হয়েছিল বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের। ম্যাচটি ড্র হয়েছিল ১-১ গোলে। ২০১১ সালে ইয়াঙ্গুনে ফ্রেন্ডলি ম্যাচে বাংলাদেশকে ২-০ গোলে হারায় ফিলিস্তিন। এরপর বাংলাদেশের বিপক্ষে যতবার খেলেছে ফিলিস্তিন ততবারই দুটি করে গোল দিয়েছে। এর মধ্যে ২০১৩ সালে কাঠমান্ডুতে এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে বাংলাদেশকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল ফিলিস্তিন।

২০১৮ সালে কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে, ২০২০ সালে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে এবং ২০২১ সালে কিরগিজস্তানে একটি ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে ফিলিস্তিনের জয় ছিল ২-০ গোলে। এ পর্যন্ত হওয়া ৬ ম্যাচে ফিলিস্তিন গোল দিয়েছে ১১টি, বাংলাদেশ ২টি।

যে ২৮ জন ফুটবলার নিয়ে কুয়েতে গেছেন বাংলাদেশের কোচ ক্যাবরেরা, তাদের মধ্যে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচটিতে ছিলেন তপু বর্মন, বিশ্বনাথ ঘোষ, জামাল ভূঁইয়া, সোহেল রানা-১, সাদ উদ্দিন ও রাকিব হোসেন। তিন বছর আগে হওয়া ওই ম্যাচে বাংলাদেশ দুটি গোলই খেয়েছিল প্রতি আক্রমণে। ৩৩ মিনিটে পিছিয়ে পড়েছিল জেমি ডে’র দল। ৪৭ মিনিটে হজম করেছিল দ্বিতীয় গোল।

ফিলিস্তিন দলটির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আছেন তিউনিসিয়ার কোচ মকরম দাবুব। ২০১০ সাল থেকে ছিলেন দলের সহকারী কোচ। ২০২১ সালে নিয়েছেন প্রধান কোচের দায়িত্ব। তার হাত ধরেই এএফসি এশিয়ান কাপে প্রথমবারের মতো নকআউট পর্বে খেলেছে ফিলিস্তিন। তিউনিসিয়ার কোচের অধীনে বিশ্বকাপ বাছাইয়েও ভালো কিছু করার প্রত্যাশা ফিলিস্তিনের।

ফিলিস্তিনের বিপক্ষে আগের ৬ ম্যাচের পাঁচটি হারলেও কোনোটিতেই বড় ধরনের বিপর্যয় হয়নি। এটাও ঠিক, সাম্প্রতিক সময়ের ফিলিস্তিন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী। গত জানুয়ারিতে কাতারে হওয়া এশিয়ান কাপে দলটি প্রথমবারের মতো উঠেছিল দ্বিতীয় রাউন্ডে। দ্বিতীয় রাউন্ডে কাতারের বিপক্ষে লিড নিয়ে হেরেছিল ২-১ গোলে।

এমন একটি দলের বিপক্ষে খেলতে নামাকে বিশাল এক চ্যালেঞ্জ বলছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন,‘আমরা জানি, ফিলিস্তিন কোন লেভেলের দল। সাম্প্রতিক সময়ে তাদের পারফরম্যান্স অনেক ভালো। এশিয়ান কাপে দারুণ খেলেছে তারা। এমন একটি দলের বিপক্ষে খেলা অবশ্যই চ্যালেঞ্জের। তারপরও আমরা পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়েই কুয়েত এসেছি। এখন আমাদের মাঠে লড়াই করার পালা।’

এ ম্যাচ থেকে ইতিবাচক রেজাল্ট নিয়েই ঢাকায় ফিরতে চান কোচ ক্যাবরেরা। তিনিও দলের সামগ্রিক প্রস্তুুতিতে সন্তুষ্ট। ক্যবরেরা বলেন, ‘আমরা দুই সপ্তাহ সৌদি আরবে অনুশীলন করেছি। দলের সবাই ম্যাচ খেলার জন্য প্রস্তুত। আশা করি, ইতিবাচক ফলাফলই করতে পারবো আমরা।’

Rent for add

সর্বশেষ নিউজ

for rent