হ্যাটট্রিকসহ এমবাপ্পের দ্রুততম গোল

মাত্র আট সেকেন্ডে লিগ ওয়ানে গোল করার পুরনো রেকর্ড স্পর্শ করেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। ফরাসী এই তরুণ সাথে করেছেন আরো দুই গোল। রোববার এমবাপ্পের হ্যাটট্রিকের সাথে নেইমারের জোড়া গোল ও লিওনেল মেসি এবং আচরাফ হাকিমির আরো দুই গোলে লিলিকে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছে পিএসজি।

লিলির মাঠে লিওনেল মেসির পাস থেকে এমবাপ্পে গোলরক্ষক লিও জারদিমকে বোকা বানিয়ে ৩০ বছরের পুরোনো রেকর্ড স্পর্শ করেছেন। এবারের মৌসুমে লিগে এটি ছিল তার দ্বিতীয় গোল। ১৯৯২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি কানেসের বিপক্ষে কায়েনের স্ট্রাইকার মাইকেল রিও ৮ সেকেন্ডে গোলের প্রথম রেকর্ডটি করেছিলেন। যদিও পরিসংখ্যান প্রতিষ্ঠন মিস্টারচিপ জানিয়েছে রিও এমবাপ্পের তুলনায় কিছুটা আগে গোলটি করেছিলেন। রিও সময় নিয়েছিলেন ৭.৯ সেকেন্ড, আর এমবাপ্পে নিয়েছেন ৮.৩ সেকেন্ড।

মেসি, নেইমার ও হাকিমির গোলে বিরতির আগেই ৪-০ গোলের লিড পায় প্যারিসের জায়ান্টরা। চলতি সপ্তাহ জুড়েই পিএসজি শিবিরে চলছিল নেইমার-এমবাপ্পের শীতল সম্পর্ক নিয়ে অস্বস্তি। মাঠের পারফরেমেন্সে অবশ্য কেউই কোন ছাড় দেননি। এমবাপ্পে হ্যাটট্রিক করলেও ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার করেছেন দুই গোল।

ম্যাচ শেষে পিএসজি বস ক্রিস্টোফে গালটিয়ার বলেছেন, ‘মাঠে দুজনকেই খুশি দেখাটা সত্যিকার অর্থেই দারুণ স্বস্তির। তারা একে অপরের জন্য খেলেছে। দুজনের প্রতিভা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। আর এই প্রতিভা যখন একসাথে বিকশিত হয় তখন ম্যাচটি উপভোগ্য হওয়াটাই স্বাভাবিক।’

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে নেইমার দলের হয়ে পঞ্চম গোলটি করেন। ৫৪ মিনিটে জোনাথান বাম্বা লিলির হয়ে এক গোল পরিশোধ করেন। কিন্তু ম্যাচ শেষে তা সান্তনার গোল হয়ে থেকেছে। ৬৬ ও ৮৭ মিনিটে এমবাপ্পে আরো দুই গোল করে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন। আর এই দুই গোলেরই যোগানদাতা ছিলেন নেইমার।

পিএসজি ও লিলির মধ্যকার ম্যাচের মধ্য দিয়ে সপ্তাহটি শেষ হয়েছে। আর লিগ ওয়ানের এই সপ্তাহ ভিন্ন এক কারণে সবার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। শনিবার নঁতের বিপক্ষে মার্সেইর স্যামুয়েল গিজট ও লেন্সের বিপক্ষে মোনাকোর ভানডারসন লাল কার্ড দেখার পর রোববার আরো নয়টি লাল কার্ড দেখেছে লিগ ওয়ান। গত ৩০ বছরের ইতিহাসে লিগ ওয়ানের কোন এক সিঙ্গেল রাউন্ডে এটাই সবচেয়ে বেশি লাল কার্ডের ঘটনা।

এছাড়া লিগ টু-তেও ঘটেছে সাতটি লাল কার্ডের ঘটনা। এর মধ্যে তিনটি ছিল ঘরের মাঠে লি হাভরের বিপক্ষে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়া সেইন্ট-এতিয়েনের পক্ষে।

রোববার আজাসিওর বিপক্ষে রেনের দুই খেলোয়াড়, মন্টিপিলিয়ার বনাম অক্সেরের মধ্যকার ম্যাচে দুই দলের দুজন করে চার খেলোয়াড়, ক্লেমরের বিপক্ষে নিসের দুই খেলোয়াড় এবং ব্রেস্টের বিপক্ষে অ্যাঙ্গার্সের এক খেলোয়াড় লাল কার্ড পেয়েছেন।

২০১২ সালের মে মাসের পর লিগ ওয়ানে প্রথম জয় তুলে নিয়েছে অক্সেরে। কিন্তু মন্টিপিলিয়ারের বিপক্ষে ২-১ গোলের জয়ে এই ম্যাচটিতে ঘটেছে চারটি লাল কার্ডের ঘটনা। ৪৬ মিনিটে মন্টিপিলিয়ারের মিডফিল্ডার খলিল ফায়াদ লাল কার্ড দেখে মাঠত্যাগে বাধ্য হন। এরপর ৫১ মিনিটে মাঠে ত্যাগ করেন অক্সেরে স্ট্রাইকার এম’বায়ে নিয়াং। ৭০ মিনিটে ম্যাচে সমতা ফেরানো নুনো ডি কস্তা ৮০ মিনিটে দুই হলুদ কার্ডে মাঠের বাইরে চলে যাবার পর ইনজুরি টাইমে মন্টিপিলিয়ারের মিডফিল্ডার তেজি সাভানিয়ারও লাল কার্ড পেয়েছেন।

ম্যাচ শেষে অক্সেরে কোচ জিন-মার্ক ফারলান বলেছেন, ‘চারটি লাল কার্ডের ঘটনা সত্যিই বিরল। ভাগ্য ভাল এরপরও মাঠে বিশাল কোন সংঘর্ষ হয়নি। আমাদের সময় আমরা যখন খেলতাম একে অন্যকে মেরে ফেলার মত অবস্থা হতো। কিন্তু কখনই হলুদ কিংবা লাল কার্ড দেখানো হয়নি। গুরুতর ইনজুরির বিষয়টি বিবেচনা করে উয়েফা সব আইন বদলে দিয়েছে।’

৭০’র দশকের মাঝামাঝি থেকে ৯০’এর শুরু পর্যন্ত বেশ কিছু ফরাসী ক্লাবে খেলেছেন ফারলান। প্রতিপক্ষ কোচের এই মন্তব্যের সাথে একমত পোষন করে মন্টিপিলিয়ারের কোচ অলিভার ডাল’ওগলিও বলেন, ‘এখন যেকোন ঘটনা ঘটার সাথে সাথে দ্রুত লাল কার্ড দেখানো হয়।

এমনকি পেনাল্টির নির্দেশনার বেশ দ্রুত দেয়া হয়। সব সময়ই আমরা নতুন নতুন নির্দেশনার মুখে পড়ছি। এর ফলে কার্যত ফুটবলই হয়তবো পিছিয়ে যাচ্ছে।’

Rent for add

সর্বশেষ নিউজ

for rent