চুমুকাণ্ডে পদত্যাগই করতে হলো স্পেন ফুটবল প্রধানকে

নারী বিশ্বকাপজয়ী স্পেন ফুটবলার জেনি হারমোসোকে পুরস্কার মঞ্চে জড়িয়ে ধরে ঠোটে চুমু দেয়ার ঘটনায় শেষ পর্যন্ত র‌য়্যাল স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগই করতে হয়েছে লুইস রুবিয়ালেসকে।-জাগোনিউজ

হারমোসোকে চুমু দেয়ার ঘটনায় আগেই রুবিয়ালেসের বিপক্ষে তদন্ত শুরু করেছিলো ফিফা। স্পেনেও ফৌজদারি অপরাধে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। শুধু তাই নয়, যাকে চুমু দিয়েছিলেন, সেই জেনি হারমোসোও শেষ পর্যন্ত গত সপ্তাহে লুইস রুবিয়ালেসের বিপক্ষে ‘যৌন হেনস্তা’র অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।

এই মামলার পরই স্পেনের সর্বোচ্চ আদালতের কৌঁশলীরা রুবিয়ালেসের বিপক্ষে তদন্ত শুরুর প্রক্রিয়া শুরু করে। যার জের ধরে রুবিয়ালেসকে আরএফইএফ-এর প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হলো।

গত মাসে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে নারী বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় স্পেন। ফাইনাল শেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে যখন একে একে স্পেন খেলোয়াড়রা উঠে এসে মেডেল সংগ্রহ করছিলেন, তখন সব ফুটবলারকেই শুভেচ্ছা জানাচ্ছিলেন আরএফইএফ প্রেসিডেন্ট লুইস রুবিয়ালেস। কিন্তু জেনি হারমোসোকে শুধু শুভেচ্ছা জানানোই নয়, হঠাৎ জড়িয়ে ধরে তার ঠোটে চুমু দিয়ে বসেন।

খুব দ্রুত ঘটনা ঘটে যায় এবং জেনি হারোমোসোও তখন এতকিছু বুঝে উঠতে পারেননি। পরে যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, তখন এ নিয়ে তুমুল সমালোচনা তৈরি হয়। যা নিয়ে হারমোসোও খুব বেশি একটা অভিযোগ তোলেননি। বলেছিলেন, ‘হয়তো আবেগের বশেই এমনটা করে ফেলেছিলেন রুবিয়ালেস। তবে এতে ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।’

লুইস রুবিয়ালেসও শুরু থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন। যদিও ফিফা তদন্ত শুরুর ঘোষণা দেয়ার পর প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পেরে এমনটা করে ফেলেছি। সবাই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

কিন্তু জেনি হারমোসো গত সপ্তাহে তার বিপক্ষে যৌন হেনস্তার অভিযোগে স্পেনের সর্বোচ্চ আদালতে মামলা করার পর আর তার আরএফইএফ-এর প্রেসিডেন্ট পদে থাকা সম্ভব হলো না। পদত্যাগ করতেই হলো।

রোববার শেষ বিকেলের দিকে আরএফইএফ-এর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে লুইস রুবিয়ালেসের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। শুধু তাই নয়, উয়েফার সহ-সভাপতির পদেও রয়েছেন রুবিয়ালেস এবং সেখান থেকেও তিনি পদত্যাগ করবেন।

এর আগে ফিফা লুইস রুবিয়ালেসকে ফুটবলীয় সব কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চালানো এবং রিপোর্ট পেশ করার সময় নির্ধারণ করে।

রোববার এক খোলা চিঠিতে রুবিয়ালেস বলেন, ‘আমি ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট পেদ্রো রোচার কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছি। একই সঙ্গে আমি তাকে জানিয়েছি যে, উয়েফার সহ-সভাপতির পদ থেকেও আমি পদত্যাগ করবো। সুতরাং, উয়েফায় আমার সহ-সভাপতির পদে অন্য কাউকে দেখা যেতে পারে।’

রুবিয়ালেস আরও বলেন, ‘ফিফা কর্তৃক বহিস্কার হওয়া এবং আমার বিরুদ্ধে যতগুলো আইনি প্রক্রিয়া বিদ্যমান, সবগুলোর পর আমি নিশ্চিত করে বলতে চাই যে, এই পদে আর ফিরে আসতে সক্ষম হবো না।’

গত কিছুদিন ধরে চলা চাপের মুখে রুবিয়ালেসের পদত্যাগের দাবি জোরালো হয়ে উঠছিলো। কিন্তু তিনি নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। পদত্যাগ করবেন না বলে জানিয়ে দেন। তবে, ফিফার নিষেোজ্ঞা এবং জেনি হারমোসোর মামলার পর আর পদে থাকতে পারলেন না এই স্প্যানিশ ফুটবলের কর্মকর্তা।

Rent for add

সর্বশেষ নিউজ

for rent