কোপার ফাইনালে ওসাসুনা

অতিরিক্ত সময়ের গোলে অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের সাথে দ্বিতীয় লেগে ১-১ গোলে ড্র করে দুই লেগ মিলিয়ে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে কোপা ডেল রে’র ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ওসাসুনা।

বিলবাও তাদের ঘরের মাঠের ম্যাচে প্রায় পুরোটা সময় দাপট দেখিয়েও জয়ী হতে পারেনি। তবে এজন্য ওসাসুনার গোলরক্ষক সার্জিও হেরেরার অসাধারণ নৈপুণ্যের প্রশংসা করতে হয়। তার দূরন্ত পারফরমেন্সেই ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত গড়ায়।

প্রথম লেগে ওসাসুনা এজ আব্দের একমাত্র গোলে জয়ী হয়েছিল। ইনাকি উইলিয়ামসের গোলে ৩৩ মিনিটে বিলবাও এগিয়ে গিয়ে সমতায় ফিরেছিল। নির্ধারিত সময় পর্যন্ত আর কোন গোল না হওয়ায় ফলাফল নিষ্পত্তির জন্য অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজন হয়। স্যান মেমেসে ম্যাচ শেষে চার মিনিট আগে পাবলো ইবানেজের গোলে ওসাসুনার জয় নিশ্চিত হয়।

এর মাধ্যমে ১৮ বছর পর প্রথমবারের মতো কোপা ডেল রে’র ফাইনালে উঠলো ওসাসুনা। ক্লাব ইতিহাসে এটি তাদের দ্বিতীয় ফাইনাল। এখনো অবশ্য কোপার শিরোপা পাওয়ান হয়নি ওসাসুনার।

এবারের কাপ শিরোপা লড়াইয়ে রিয়াল বেটিস ও সেভিয়ার মতো পরীক্ষীত দলগুলোকে হারিয়ে দারুণভাবে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে গেছে জাগোবা আরাসাতের দল। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যকার আরেক সেমিফাইনালের বিজয়ী দল।

ম্যাচ শেষে ইবানেজ বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে আমি কিছুই বলতে পারছিনা। পুরো ম্যাচেই আমাদের বেশ কঠিন সময় পার করতে হয়েছে। আজকের এই গোলটি সমর্থকের উৎস্বর্গ করলাম যারা পুরো ম্যাচে আমাদের সমর্থন দিয়েছে। এটা এমন এক অনুভূতি যার ব্যাখ্যা দেয়া যায়না। আমরা জানতাম তারা গোল করবে এবং তাতে আমরা কঠিন পরিস্থিতিতে পড়বো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা ম্যাচ ছাড়িনি। তার ফল আমরা পেয়েছি। আমাদের সামনে মাদ্রিদ বা বার্সা যেই আসুক না কেন সেটা নিয়ে ভাবছি না, আমরা স্বপ্ন দেখে যাব।’

এর আগে তাদের দুটি কাপ ম্যাচই অতিরিক্ত সময়ে শেষ হয়েছে। যার মধ্যে শেষ ৩২’এ জিমন্যাস্টিকের বিপক্ষে ম্যাচটিও রয়েছে যেখানে ইবানেজ লাল কার্ড দেখে মাঠ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন।

এ নিয়ে টানা চার মৌসুম সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা দেখালো অ্যাথলেটিক। কিন্তু ১৯৮৪ সালের পর এখনো শিরোপা হতে পায়নি। ঐ সময়ের পর থেকে ছয়টি ফাইনালে তারা পরাজিত হয়েছে।

ইনাকি বলেছেন, ‘আজ আমরা অনেক সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু ফুটবলে মাঝে মাঝে এমন ঘটনা ঘটে। আমরা সত্যিই দারুন হতাশ। যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি জয়ী হতে, কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিলনা।’

অ্যাটাকিং মিডফিল্ড পজিশনে অ্যাথলেটিক কোচ আর্নেস্টো ভালভাদে ডানি গার্সিয়ার পরিবর্তে ইকাম মুনিয়ানকে মাঠে নামিয়েছিলেন। স্টেডিয়ামের বাইরে প্রচন্ড ভিড়ের কারনে ওসাসুনার কোচ আরাসাতে ভিতরে ঢুকতে পারছিলেন না, যে কারনে নির্ধারিত সময়ের ১০ মিনিট পর ম্যাচটি শুরু হয়। স্বাগতিক সমর্থকদের উচ্ছসিত সমর্থনকে পুঁজি করে অ্যাথলেটিক শুরুটা ভালই করেছিল। গোর্কা গুরুজেতার শট রুখে দেন হেরেরা। ২৫ মিনিটে নিকো উইলিয়াসের শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যা।

একের পর এক আক্রমণে ভালাভার্দের দল ভালই চাপ সৃষ্টি করেছিল। ওসকার ডি মার্কোর হেড কর্ণারের মাধ্যমে রক্ষা করেন হেরেরা। ৩৩ মিনিটে আর শেষ রক্ষা হয়নি। মিকেল ভেসগাসের হেড থেকে দারুণ দক্ষতায় বল জালে জড়ান ইনাকি উইলিয়ামস। অক্টোবরের পর থেকে এ্যাথলেটিকের হয়ে এটি তার প্রথম গোল। টানা ১৮ ম্যাচে তিনি কোন গোল করতে পারেননি। বিরতির ঠিক আগে ঘানা এই তারকা স্ট্রাইকার আবারো বল জালে জড়িয়েছিলেন। কিন্তু অফসাইডের কারনে তা বাতিল হয়ে যায়। ২০ মিনিট বাকি থাকতে ইনাকি পাসে নিকোর শট বারের উপর দিয়ে চলে গেলে এগিয়ে যাওয়া হয়নি স্বাগতিকদের। পোস্টের খুব কাছে থেকে ইনিগো মার্টিনেজের শট আবারো রুখে দেন হেরেরা। রেকর্ড সাড়ে ৫১ হাজার স্বাগতিক দর্শকের হতাশা তখন ছিল চোখে পড়ার মত।

ম্যাচের শেষ ভাগে রাউল গার্সিয়া ও নিকো উইলিয়ামসকে সফল হতে দেননি হেরেরা। অতিরিক্ত সময়েও ওসাসুনা তাদের গোলরক্ষকের উপর ভরসা করে খেলেছে। হেরেরাও তার প্রতি আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। ম্যাচ শেষে চার মিনিট আগে জন মোনকায়োলার ক্রসে ইবানেজের ভলি ওসাসুনার ঐতিহাসিক জয় নিশ্চিত হয়। -বাসস

Rent for add

সর্বশেষ নিউজ

for rent