নাপোলির অপরাজিত থাকার রেকর্ড ভাঙ্গলো লিভারপুল

টানা ২১ ম্যাচে নাপোলির জয়ের ধারা ধরে রাখার রেকর্ড শেষ পর্যন্ত ভেঙ্গেছে লিভারপুল। মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে নাপোলিকে ২-০ গোলে পরাজিত করার পরেও অবশ্য শীর্ষস্থান নিশ্চিত হয়নি ইংলিশ জায়ান্টদের। ছয় ম্যাচে নাপোলির সাথে সমান ১৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে গ্রুপ-এ’র দ্বিতীয় স্থান নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে লিভারপুলকে।

এই ম্যাচের আগেই উভয় দলের শেষ ১৬ নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। প্রয়োজন ছিল শুধুমাত্র গ্রুপ লিডার নির্নয়ের। অ্যানফিল্ডে প্রিমিয়ার লিগের সমস্যা কাটিয়ে নাপোলিকে দাঁড়াতেই দেয়নি জার্গেন ক্লপের দল। ম্যাচ শেষের পাঁচ মিনিট আগে ডারউইন নুনেজের হেড নাপোলি গোলরক্ষক এ্যালেক্স মেরেত রুখে দিলে ফিরতি শটে বল জালে জড়ান মোহাম্মদ সালাহ। এরপর ইনজুরি টাইমে নুনেজ ব্যবধান দ্বিগুণ করার পাশাপাশি দলের জয় নিশ্চিত করেন। সেপ্টেম্বরে নাপোলির কাছে ৪-১ গোলে হারার পর এ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা পঞ্চম জয় নিশ্চিত করলো লিভারপুল। লুসিয়ানো স্পালেত্তির দল গ্রুপের শীর্ষস্থান দখলের জন্য চার গোলের ব্যবধানে পরাজিত না হওয়াই কেবলমাত্র নিশ্চিত করেছে।

ম্যাচ শেষে স্পালেত্তি বলেছেন, ‘আমি বুঝতে পেরেছিলাম আমার দল কিছুটা হলেও পিছিয়ে রয়েছে। তাই ব্যবধানটা মাথায় রাখার পরামর্শ দিয়েছিলাম। শেষভাগে বেশ কিছু সুযোগ তৈরী করেও কাজে লাগাতে পারিনি।’

রোববার প্রিমিয়ার লিগে টটেনহ্যামের বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে কয়েকজন খেলোয়াড়কে বিশ্রামে রাখার প্রত্যাশা করা হলেও শেষ পর্যন্ত শক্তিশালী দল নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন ক্লপ। এই ম্যাচের মাধ্যমে ইতালিয়ান জায়ান্টরা এবারের মৌসুমে এনিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো কোন গোল করতে পারেনি।

কনিবার লিডসের বিপক্ষে ২-১ গোলের পরাজয়ের মধ্য দিয়ে পাঁচ বছরে প্রথমবারের মতো অ্যানফিল্ডে স্বাগতিক দর্শকদেও সামনে প্রিমিয়ার লিগে পরাজয়েল স্বাদ পেয়েছে রেডসরা। যে কারণে দর্শকদের একটি জয় উপহার দেয়াটা জরুরি ছিল। ক্লপ বলেন, ‘আমরা সত্যিকার অর্থেই দারুণভাবে নিজেদের ফিরিয়ে এনেছি। সার্বিকভাবে নিজেদের পরিবর্তন করে নাপোলিকে দাঁড়াতেই দেইনি। নাপোলি এমন একটি দল যাদের বিপক্ষে খেলাটা সবসময়ই কঠিন। আমি মনে করি এই মুহূর্তে নাপোলি যে ধরনের ফুটবল খেলছে তাতে আমাদের এই পারফরমেন্স সত্যিই প্রশংসার দাবীদার।’

এবারের মৌসুমে ইতোমধ্যেই ৫০ গোল ঝুলিতে নিয়ে অ্যানফিল্ডে এসেছিল নাপোলি। কিন্তু নিজেদের সেরাটা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় কোন গোল ছাড়াই তাদের বাড়ি ফিরতে হয়েছে। থিয়াগো আলকানটারার শট কোনমতে রুখে দেন মেরেত। প্রথমার্ধে এই একটি সুযোগ ছাড়া দুই দলের কাছ থেকে আর তেমন উল্লেখযোগ্য আক্রমণ আসেনি।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথম কোন ইতালিয়ান দল হিসেবে গ্রুপ পর্বের ছয়টি ম্যাচেই জয়ের সুযোগ ছিল নাপোলির সামনে। দ্বিতীয়ার্ধে সেই গতিতেই মাঠে নেমেছিল সফরকারীরা। কাভিচা কাভারাতখেইলার ফ্রি-কিকে লিও ওস্টিগার্ডেও হেড জালে জড়ালেও ভিএআর প্রযুক্তি অফসাইডের কারনে তা বাতিল করে দেয়। জয়ের লক্ষ্যে কার্টিস জোনসের স্থানে ৭৩ মিনিটে উরুগুইয়ান নুনেজকে মাঠে নামান ক্লপ। লিভারপুলের দুটি গোলই এসেছে কর্ণার থেকে। ৮৫ মিনিটে কোস্টাস টিসিমিকাসের কর্ণার থেকে নুনেজের হেড ধরতে গিয়ে মেরেত খেই হারিয়ে ফেললে সেই সুযোগে সালাহ বল জালে জড়ান।

সালাহ বলেছেন, ‘বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি দলের বিপক্ষে জয়ী হয়াটা সত্যিই অসাধারণ এক অনুভূতি। আমি এটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। এটা অবশ্যই একটি ভাল ফল যা আমাদের কাপ ও লিগে আত্মবিশ্বাস যোগাবে।’

সালাহকে দিয়ে নুনেজ ম্যাচের শেষ ভাগে আরো একটি গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু মিশরীয় তারকার শটটি ডিফ্লেকটেড হয়ে বাইরে চলে যায়। ইনজুরি টাইমে আট মিনিটে বেনফিকার সাবেক এই স্ট্রাইকার নিজেই গোল করে দলের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। ডাচ ডিফেন্ডার ভার্জিল ফন ডিকের হেড আবারো মেরেত রুথে দিলেন নুনেজ বল জালে জড়ান। প্রাথমিক ভাবে গোলটি অফসাইডের কারণে বাতিল করা হলেও পরবর্তীতে ভিএআর প্রমাণ করে নুনেজ অনসাইড পজিশনেই ছিল।

Rent for add

সর্বশেষ নিউজ

for rent