জার্মানী ‘বুড়োদের’ জন্য ইউরো জিততে চায়

ম্যানুয়েল্য নয়্যার, থমাস মুলার, টনি ক্রুস- জার্মান এই তিন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের এক সাথে বয়সের যোগফল ১০৬। ২০১৪ বিশ্বকাপ জয়ী এই তিন তারকার জন্যই হয়তোবা এটাই শেষ ইউরো চ্যাম্পিয়শিপ। আর তাই বিদায় বেলায় দীর্ঘদিনের সঙ্গীদের আরো একটি শিরোপা উপহার দিতে চায় সতীর্থরা।

মাঠের দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধু নয়্যার, মুলার ও ক্রুস ২৬ সদস্যের এবারের দলের এমন তিন খেলোয়াড় যাদের প্রত্যেকেরই জার্মানীর জার্সিতে ১০০রও বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। শুধুমাত্র স্কোয়াডের সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় হিসেবে নয়, বিশ্বফুটবলে একসময় রাজত্ব করা জার্মানী দলের সদস্য হিসেবে তাদেরকে কিছু একটা উপহার দিতে চায় পুরো দল। তারা নিজেরাও এই বিদায়কে স্মরণীয় করে রাখতে মুখিয়ে আছে।

ইউরো ২০১৬’র সেমিফাইনালে ফ্রান্সের কাছে বিদায়ের পর থেকে বড় টুর্নামেন্টে জার্মানরা তাদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি। পরপর দুটি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের পর ইউরো ২০২০’এ ইংল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয়ে নক আউট পর্বের প্রথম ম্যাচেই ফিরতি পথ ধরেছিল জার্মানী।

এবারের আসরে স্কটল্যান্ডকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ইউরো যাত্রা শুরু করেছে স্বাগতিকরা। প্রায় এক দশক পর বড় কোন টুর্নামেন্টে এটাই জার্মানীর সেরা পারফরম্যান্স। ঘরের মাঠে শেষ হাসিটাও তাই হাসতে চাচ্ছে জার্মানীর অতি প্রিয় ‘বুড়োরা’।

বড়দের পাশাপাশি স্কোয়াডে থাকা ছোটদের উপরও প্রত্যাশার চাপ কম নয়। ২১ বছর বয়সী জামাল মুসিয়াল, ফ্লোরিয়ান রিটজের উপর পুরো আক্রমণভাগ নির্ভরশীল। ২৫ বছর বয়সী কেই হাভার্টজও দলকে সম্প্রতি দারুণ কিছু জয় উপহার দিয়েছেন। এ কারণেই বলতেই হয় সবচেয়ে অভিজ্ঞ দল হিসেবে এবারের ইউরোতে খেলতে নেমেছে জার্মানী।

২৮.৫ গড়ে জার্মান দলটি এবারের টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি বয়সী দল। ২৬ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে ১০জনই ৩০ অথবা তার উর্ধ্বে বয়স।

শুক্রবার স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে যে একাদশ নিয়ে স্বাগতিকরা মাঠে নেমেছিল তাদের গড় বয়স হিসেব করলে দেখা যায় ২০০০ সালের টুর্নামেন্টের পর সবচেয়ে বেশি বয়সী জার্মান দল। ৩৮ বছর বয়সী নয়্যার কোচ জুলিয়ান নাগলসম্যানের থেকে দুই বছর বড়। ক্রুস (৩৪) ও মুলার (৩৪) উভয়ই অধিনায়ক ইকে গুনডোগানের থেকে বয়সে বড়। ২০১১ সালে গুনডোগান জার্মান জার্সিতে অভিষিক্ত হন। কিন্তু পিঠের ইনজুরির কারণে ২০১৪ বিশ্বকাপ জয়ী দলে ছিলেন না। ২০০৯ সালের জুনে প্রথমবারের মতো জার্মানীর হয়ে মাঠে নেমেছিলেন নয়্যার। নয় মাস পর একই ম্যাচে অভিষেক হয়েছিল মুলার ও ক্রুসের।

এবারের ইউরো শেষে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন ক্রুস। এর আগে ২০২১ সালেও তিনি অবসর নিয়েছিলেন। কিন্তু ঘরের মাঠে ২০২৪ ইউরোকে সামনে রেখে আবারো ফিরে আসেন।

এই তিনজনের মধ্যে ক্রুস নি:সন্দেহে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেকে সবচেয়ে বেশি প্রমাণ করেছেন। পুরো ম্যাচে তার ধৈর্য্য ও বলের নিয়ন্ত্রণ সবার চোখে পড়েছে। প্রাক-টুর্নামেন্টে বেশ কিছু ভুলের পরও নয়্যার মূল দলে তার জায়গা ধরে রেখেছেন শুধুমাত্র অভিজ্ঞতার জন্য। মুলার হয়তোবা নিজের সেরা ফর্মের থেকে কিছুটা পিছিয়ে আছে। কিন্তু তারপরও পুরো দল এখনো তার উপর আস্থাশীল।

ইউরো ২০২৪’র স্কোয়াড ঘোষণার সময় নাগলসম্যান মুলারকে একজন সংযোগকারী হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন, যিনি নতুনদের সাথে পুরোনদের একটি মেলবন্ধনে দলের মধ্যে সবসময়ই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।

নয়্যার বলেছেন, তারা তিনজন মিলে দলের মধ্যে ইতিবাচক এক আমেজ উপহার দিয়েছেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি। দীর্ঘদিন ধরে দলের অনেক ভাল ও বাজে ম্যাচের সাথে আমরা জড়িয়ে আছি। শুরুতে কেউই জানেনা সে আসলেই কোথায় দাঁড়িয়ে আছে।’ তবে নয়্যার বলেন জার্মানী তাদের পা মাটিতেই রেখেছে। টুর্নামেন্টে দূরন্ত সূচনার পরও কেউই আত্মতুষ্টিতে ভুগছে না। বাসস।

Rent for add

সর্বশেষ নিউজ

for rent