নারী ফুটবল লিগ

নাসরিন একাডেমির ‘রহস্যঘেরা’ চমক

নারী ফুটবল লিগে দলবদলের শেষ দিনে সবচেয়ে বড় চমক নাসরিন স্পোর্টিং একাডেমী। নারী ফুটবলের শুরু থেকে সাধারণ মানের দল গড়ে আসছে। আকস্মিকভাবে এবার তারা সিনিয়র ১৫ ফুটবলার নিয়ে দল গড়েছে। যা ফুটবলাঙ্গনে যেমন চমক, তেমনি রহস্যেরও সৃষ্টি করেছে। ক্রীড়াঙ্গনের তৃণমূলে নারী সংগঠক হিসেবে পরিচিত নাসরিন আক্তার বেবী। তিনি ফুটবল, হ্যান্ডবলসহ একাধিক খেলায় দল গঠন করেন। সূত্র: ঢাকাপোস্ট.কম

অনেক কষ্টেসৃষ্টে দলগঠন করা বেবী এবার সাবিনা, সানজিদা ও কৃষ্ণাদের নিয়ে চ্যাম্পিয়ন দল গড়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন। জাতীয় দলের ১৫ জন ফুটবলার নিয়ে দল গড়তে অনেক অর্থের প্রয়োজন। তবে আকস্মিক সেই অর্থের যোগান নিয়ে সেভাবে খোলাসা করেননি নাসরিন আক্তার বেবী, ‘আসলে আন্তরিকতাই বড় বিষয়। আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছি, মেয়েদেরও ইচ্ছে ছিল। সবকিছু মিলিয়ে এটা সম্ভব হয়েছে।’

পেশাদার ফুটবলে আন্তরিকতাই শেষ কথা নয়, এখানে আর্থিক ব্যাপারটাই মূখ্য। নাসরিন বেবী এই ব্যাপারে বলেন, ‘কিছু স্পন্সর পেয়েছি, কিছু জোগাড়ের চেষ্টা করছি। সাংবাদিকের আর্থিক সংক্রান্ত প্রশ্নে বারবারই নাসরিন মহিলা ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণের সঙ্গে মৃদুস্বরে কথা বলছিলেন। যা আরও রহস্য সৃষ্টি করেছে।

বসুন্ধরা কিংস নারী ফুটবলের হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন। তারা এবার দল গড়েনি। বসুন্ধরা কিংস দল না গড়ায় সাবিনা-সানজিদাদের লিগ খেলা ছিল অনিশ্চয়তায়। শেষ মুহূর্তে নাসরিন স্পোর্টস একাডেমিতে সাবিনারা খেলছেন। বসুন্ধরা কিংসে সাবিনারা ভালো অঙ্কের সম্মানী পেতেন। নাসরিনে সেই অঙ্ক খানিকটা কাছাকাছিই পাবেন বলে জানিয়েছেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন।

সাবিনা নাসরিন স্পোর্টস একাডেমিতে খেলা নিয়ে সাবিনা বলেন, ‘আমাদের সবাইকে এই দলে দেখে অনেকেই অবাক হচ্ছেন। আপনাদের মধ্যে অনেক প্রশ্নের ঘুরপাক খাচ্ছেন। আমরা দিন শেষে ফুটবলার। ভালোবেসে, পেশাদারিত্বের টানেই খেলছি।’

নারী ফুটবল লিগে গত দুই মৌসুম বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে শিরোপা লড়াই করেছে আতাউর রহমান ভূঁইয়া কলেজ স্পোর্টিং ক্লাব। বসুন্ধরা কিংস এবার দল গড়বে না আগেই জানা ছিল। কিংসের হয়ে খেলা সানজিদা, সাবিনাদের আতাউরে না ভেড়াতে পারা সম্পর্কে ক্লাবটির সহ-সভাপতি সোহেল খন্দকার বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি। কয়েকজনের সঙ্গে কথাও বলেছি। শেষ পর্যন্ত হয়নি। তবে আমাদের এই দল নিয়েও আশাবাদী চ্যাম্পিয়ন হওয়ার।’ নাসরিন স্পোর্টিংয়ের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সিনিয়র ফুটবলাররা আতাউর রহমানে। তবে সেই সংখ্যাটা খুব বেশি নয় ফরোয়ার্ড তহুরা খাতুনসহ আরও কয়েকজন।

২০০৩ সালের পর বাংলাদেশ পুরুষ ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা হতে পারেনি। ২০২২ সালে সাবিনারা দক্ষিণ এশিয়ার সেরা হয়েছে। নারী ফুটবলে সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আবাহনী-মোহামেডানের মতো প্রতিষ্ঠিত ক্লাবগুলো এগিয়ে আসছে না। এখানে ক্লাবের সদিচ্ছার অভাব দেখছেন অধিনায়ক সাবিনা, ‘পুরুষ ফুটবলারদের একজনের পারিশ্রমিক দিয়ে একটি নারী দল গঠন করা যায়। ফেডারেশনের একার পক্ষে তো সম্ভব নয়। অন্য ক্লাবগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে।’

বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণও বড় দল লিগে না আসার ব্যাপারে অসহায়ত্ব প্রকাশ করলেন, ‘আমরা সবাইকে অনুরোধ করেছি, চাপ বা বাধ্য করতে পারি না। অনুরোধের চেয়ে বেশি কিছু করার নেই।’

বসুন্ধরা কিংস গত বছর লিগে আতাউর রহমান দল বাফুফে ভবনে থাকার এবং জাতীয় দলে কোচিং স্টাফদের সহায়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। এবার বাফুফে ভবনে আতাউর রহমানের পাশাপাশি নাসরিন একাডেমিও থাকবে। এই প্রসঙ্গে কিরণের ব্যাখ্যা, ‘যারা এখানে থাকবে তারা অর্থ দিয়েই থাকবে। নারীদের নিরাপত্তার একটি বিষয় রয়েছে।’

এবারের নারী লিগে ৯টি ক্লাব অংশগ্রহণ করছে। আর্মি স্পোর্টস ক্লাব খেলার কথা ছিল না। আজ শেষদিনের শেষ মুহুর্তে তারা দলবদলে অংশগ্রহণ করছে। বাকি আট ক্লাবের মধ্যে শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠিত ক্লাব ফরাশগঞ্জ। প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের দ্বিতীয় স্তরে রেলিগেশন এড়ানোর লড়াইয়ে থাকা ফরাশগঞ্জের নতুন চ্যালেঞ্জ নারী দল। ক্লাবটির কর্মকর্তা বাবুরাম বলেন, ‘আসলেই আমাদের জন্য কষ্টকর। এরপরও নারীদের অগ্রযাত্রার সঙ্গী হতে আমরা দল গঠন করেছি।’

Rent for add

সর্বশেষ নিউজ

for rent