নারী বিশ্বকাপের ফাইনালে রোববার ইংল্যান্ড-স্পেন মুখোমুখি

নারী বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালে আগামীকাল (২০ আগস্ট) রোববার ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে ইউরোপের আরেক পাওয়ার হাউজ স্পেন। এই ফাইনাল ইতোমধ্যে নাম লিখিয়েছে নতুন রেকর্ড বইয়ে। অল ইউরোপীয় এই ফাইনালে অংশগ্রহণকারী দুটি দলই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলতে যাচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিতব্য ফাইনালে ৭৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন স্টেডিয়ামটি পরিপূর্ণ থাকবে বলেই আশা করা হচ্ছে। চার বছর আগে অনুষ্ঠিত আসরে অংশ নিয়েছিল ২৪টি দল। এবার ৩২টি দল। আগের আসরের তুলনায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবারের আসরে বেশ কয়েকটি ফেভারিট দলকেই বিদায় নিতে হয়েছে আগেভাগেই।

গ্রুপ পর্ব থেকেই ব্রাজিলের সঙ্গে বিদায় নিয়েছে জার্মানি, ইতালী ও অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন কানাডা। এরপর শেষ ষোল থেকে বিদায় নেয় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন যুক্তরাষ্ট্র। এই প্রথম টুর্নামেন্ট থেকে এতো আগে বিদায় নিয়েছে মার্কিন রমনীরা।

অপরদিকে প্রথমবারের মতো টুর্নামেন্টের শেষ ষোলতে নাম লিখিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, জ্যামাইকা ও মরক্কো। আর প্রথমবারের মতো টুর্নামেন্টে এসেই কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে কলম্বিয়া। ইংল্যান্ডের কাছে ২-১ গোলে হেরে সেখান থেকে বিদায় নেয় দক্ষিণ আমেরিকার ওই দলটি।

র‌্যাংকিংয়ের নিচের সারির দলগুলো এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে যে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে বড় দলগুলোর সঙ্গে তাদের মানের ব্যাবধান খুব একটা বেশি নয়। অবশ্য শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্টের ফাইনালে শীর্ষস্থানীয় দুটি দলই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাচ্ছে।

বর্তমান চ্যাম্পিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শিরোপা ফেভারিট হিসেবেই টুর্নামেন্টে অংশ নিতে এসেছে সারিনা উইগম্যানের ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। যদিও স্পেনের মতো এর আগে কখনো বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলতে পারেনি ইংল্যান্ড।

সর্বশেষ ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার ফাইনালে পরস্পরের মোকাবেলা করেছে দল দুটি। অতিরিক্তি সময়ে গড়ানো ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে জয় পায় ইংল্যান্ড। আর ফাইনালে জার্মানিকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বড় কোন শিরোপা ঘরে তোলে ইংল্যান্ড। ওই আসরে অবশ্য নিজ মাঠে সমর্থকদের জোড়ালো সমর্থন পেয়েছিল স্বাগতিক ইংল্যান্ড। যা এবার তারা পাচ্ছে না। বরং স্বাগতিক অস্ট্রেলীয় সমর্থকরা সমর্থন দিবে স্পেনকে। কারণ ইংল্যান্ডের কাছে হেরে সেমিফাইনাল থেকে দু:খজনকভাবে বিদায় নিতে হয়েছে টুর্নামেন্টের সহআয়োজক অস্ট্রেলিয়াকে।

ইতোমধ্যে স্টেডিয়াম অস্ট্রেলিয়ার টিকিট বিক্রির যে হার দেখা যাচ্ছে তাতে নারী ফুটবলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দর্শক সমাগম ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উইগম্যানের হাতে বিশ্বসেরা একটি স্কোয়াড থাকলেও তিনি নিজেই ইংল্যান্ডের জন্য বড় সম্পদ। নারী দলের কোচ হিসেবে ইতোমধ্যে সেরা পছন্দের আসনটি দখল করে নিয়েছেন উইগম্যান। নেদারল্যান্ডসে ইউরোপীয় শিরোপা এনে দেয়ার পর প্রতিবেশী ইংল্যান্ডের দায়িত্ব নিয়েও এর পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছেন এই কোচ। শুধু তাই নয় চার বছর আগে তিনি ডাচ দলকে বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি।
ফাইনালে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ২-০ গোলে হেরে যায় তার শিষ্যরা। বুধবার স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করার পর ৫৩ বছর বয়সী কোচ উইগম্যান বলেন,‘কোচ কিংবা খেলোয়াড় হিসেবে পরপর দুটি আসরের ফাইনালে খেলার সুযোগ পাওয়াটা অবশ্যই বিশেষ কিছু। আমি কোন কিছুকেই নিশ্চিত বলে মনে করি না। তবে এটি এমন যেন আমি রূপকথার দেশে বাস করছি।’

ইতোমধ্যে ইংল্যান্ডে দারুণ সম্মানের আসন তৈরি করে নিয়েছেন উইগম্যান। আর মাত্র একটি জয় তাকে পৌঁছে দিতে পারে আলফ রামসের সহাবস্থানে। যিনি ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের পুরুষ ফুটবল দলকে পাইয়ে দিয়েছিলেন বিশ্বকাপের শিরোপা।

এদিকে ইংলিশদের ফাইনাল প্রতিপক্ষ স্পেনের জন্য অবশ্য টুর্নামেন্টের শুরুটা খুব একটা স্বস্তির ছিল না। কারণ টুর্নামেন্টের জন্য তাদের প্রস্তুতি ছিল বিশৃংখলায় ভরা। তবে সেখান থেকেই নতুন এক ইতিহাস রচনার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে স্প্যানিশরা। এখন দলটির মধ্যে স্থিতিশীলতা চলে এসছে।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর ১৫ জন খেলোয়াড় স্পেন ফুটবল ফেডারশেনকে ই-মেইল করে জানিয়েছিল তাদের যেন বিশ্বকাপের স্কোয়াডের জন্য বিবেচনা করা না হয়। তাদের ওই প্রতিবাদ ছিল কোচ হোর্হে ভিলদার বিপক্ষে। তাদের অভিযোগ, তিনি বেশ কঠোর। তারপরও ভিলদা তার দায়িত্ব ধরে রেখেছেন এবং দলটিকে স্থির রেখেছেন। সেই সঙ্গে দাপটের সঙ্গে তার দল পৌঁছে গেছে টুর্নামেন্টের ফাইনালে। -বাসস

Rent for add

সর্বশেষ নিউজ

for rent