গেটাফের সামনে এসে ধাক্কা খেলো রিয়াল মাদ্রিদ

ক্লাসিকো জিতে যে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছিল রিয়াল মাদ্রিদ, পরের সপ্তাহেই তা নড়বড়ে হয়ে পড়ল। দারুণ আক্রমণাত্মক ফুটবলে তাদের রুখে দিল লিগ টেবিলের নিচের দিকের দল গেটাফে।

প্রতিপক্ষের মাঠে রোববার রাতে লা লিগায় গোলশূন্য ড্র করেছে জিনেদিন জিদানের দল। টানা চার জয়ের পর পয়েন্ট হারাল তারা।

গত সপ্তাহে লিগে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হারানোর আগে-পরে লিভারপুলের বিপক্ষে দুই লেগের লড়াইয়ে জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে ওঠে রিয়াল। আট দিনের সেই চ্যালেঞ্জিং অধ্যায় জয়ের পরই যোগ হলো এই হতাশা। তবে, মাঠের ফুটবলের বিচারে এই ১ পয়েন্টও তাদের জন্য স্বস্তির বলা যায়।

বার্সেলোনাকে হারিয়ে শীর্ষে থাকা আতলেতিকো মাদ্রিদের সঙ্গে ব্যবধান ১ পয়েন্টে নামিয়ে এনেছিল রিয়াল। এখন তা বেড়ে হলো ৩ পয়েন্ট।

বল দখলে গেটাফে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও আক্রমণে আধিপত্য ছিল তাদের। গোলের উদ্দেশে ১৯টি শট নেয় তারা, যার ছয়টি লক্ষ্যে। বিপরীতে রিয়ালের ১০ শটের দুটি ছিল লক্ষ্যে।

চোট আর করোনাভাইরাসের ছোবলে এই ম্যাচের জন্য মূল দলের মাত্র ১২ জন আউটফিল্ড খেলোয়াড় অবশিষ্ট ছিল রিয়ালের। এমন সঙ্কটের মাঝেও ভবিষ্যতের কথা ভেবে দারুণ ছন্দে থাকা করিম বেনজেমা ও টনি ক্রুসকে বেঞ্চে রাখেন কোচ। সব মিলিয়ে ক্লাসিকোর দল থেকে সাতটি পরিবর্তন এনে শুরুর একাদশ সাজান জিদান।

ভঙ্গুর দল নিয়ে ম্যাচের শুরুতেই বিপদে পড়তে বসেছিল রিয়াল। ছয় গজ বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান হাইমে মাতা, দ্রুত শটও নেন তিনি। শেষ মুহূর্তে সেটা প্রতিহত করেন প্রথমবার লা লিগায় শুরুর একাদশে সুযোগ পাওয়া তরুণ ডিফেন্ডার ভিক্তর চুস্ত।

আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠা লড়াইয়ে পরের ১০ মিনিটে উভয় পক্ষই কয়েকটি ভালো আক্রমণ করে। মূল ডিফেন্ডারদের অনুপস্থিতিতে রক্ষণ সামলানোর দায়িত্ব লিভারপুলের বিপক্ষে দারুণভাবে সামলেছিল রিয়াল। এখানেও সেটা চোখে পড়ে। ডি-বক্সে পরপর দুটি কার্যকর চ্যালেঞ্জ করেন লুকা মদ্রিচ।

অবশ্য এতে বিপত্তিও হয়; রক্ষণে বাড়তি মনোযোগ দিতে গিয়ে প্রথমার্ধে মাঝমাঠে তেমন নিয়ন্ত্রণ ছিল না রিয়ালের।

অষ্টম মিনিটে প্রতি-আক্রমণে ডি-বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে কাটিয়ে বল ঠিকানায় পাঠান মারিয়ানো দিয়াস। তবে অফসাইডের বাঁশি বাজে; ভিএআরেও তা বজায় থাকে, কিঞ্চিৎ ব্যবধানে বাইরে ছিল স্প্যানিশ এই ফরোয়ার্ডের বাহু।

আগের পাঁচ ম্যাচে জয়শূন্য এবং গত ১২ রাউন্ডে মাত্র একটি জয় পাওয়া গেটাফে আবারও ভীতি ছড়ায় ২৩তম মিনিটে। তবে মাতার হেড পোস্টে লাগলে বেঁচে যায় রিয়াল। পাঁচ মিনিট পর গোলরক্ষকের চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে দিয়াসের নেওয়া হেড কর্নারের বিনিময়ে ফেরান গেটাফের মিডফিল্ডার দাভিদ তিমোর।

বিরতির পর ম্যাচের গতি কিছুটা কমলেও আক্রমণে আগের মতোই চাপ ধরে রাখে গেটাফে। ৫৯তম মিনিটে তাদের ফরোয়ার্ড এনেস উনালের জোরালো শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ফেরান থিবো কোর্তোয়া।

৬৫তম মিনিটে একসঙ্গে দুটি পরিবর্তন করেন জিদান। দিয়াস ও রদ্রিগোকে তুলে নামান বেনজেমা ও আন্তোনিও ব্লাঙ্কোকে। কোচের আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি কেউই।

৭৮তম মিনিটে আবারও কোর্তোয়ার নৈপুণ্যে বেঁচে যায় রিয়াল। নেমানিয়া মাকসিমোভিচের জোরালো শট চুস্তের পায়ে লেগে ক্রসবার ঘেঁষে জালে ঢুকতে যাচ্ছিল। লাফিয়ে কর্নারের বিনিময়ে জাল অক্ষত রাখেন বেলজিয়ান গোররক্ষক।

৩১ ম্যাচে ২০ জয় ও সাত ড্রয়ে ৬৭ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। এইবারকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়া আতলেতিকো পয়েন্ট ৭০। ৩০ ম্যাচে ৬৫ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে বার্সেলোনা।

শিরোপা লড়াইয়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই ৩১ ম্যাচ খেলা সেভিয়াও। দিনের আরেক ম্যাচে রিয়াল সোসিয়েদাদের মাঠে ১-০ গোলে জিতে ৬৪ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে তারা। আর ৩১ পয়েন্ট নিয়ে ১৫ নম্বরে গেটাফে।

Rent for add

সর্বশেষ নিউজ

for rent